যোগাযোগ করুন

০১৯৮৮৮৯৯৯৩৬

শনিবার -শুক্রবার

সকাল ৯টা - রাত ৯টা

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত ও এটির জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো ?

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত ও এটির জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো?

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া একটা বেশ অস্বস্তিকর ব্যাপার, তাই না? দিনের মধ্যে বারবার ওয়াশরুমে ছুটতে হলে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে। তবে জানেন কি, আপনার খাদ্যাভ্যাস এক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা নিতে পারে? হ্যাঁ, ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত তা জানা থাকলে আপনি হয়তো এই সমস্যা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এই সমস্যার জন্য কোন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, সেই বিষয়েও আমরা আজ আলোচনা করব। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ

ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ

ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ হতে পারে তা নির্ভর করে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর। এটি সাধারণত তখনই সমস্যা হিসেবে গণ্য হয় যখন এটি দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায়। ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণ হতে পারে মূত্রনালীর সংক্রমণ, ডায়াবেটিস, গর্ভাবস্থা, প্রোস্টেটের সমস্যা, বা মানসিক উদ্বেগ। অনেক সময় এটি মূত্রাশয় বা কিডনির সমস্যারও ইঙ্গিত দেয়। উদাহরণস্বরূপ, মূত্রাশয়ে পাথর বা সংক্রমণ থাকলে ঘন ঘন প্রস্রাবের তাগিদ অনুভূত হতে পারে। ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে শরীর অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করার চেষ্টা করে, যা ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে।

ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ বোঝার জন্য কিছু পরীক্ষা করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে প্রস্রাব বিশ্লেষণ, আল্ট্রাসাউন্ড, এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান এবং স্নায়বিক পরীক্ষাগুলো। চিকিৎসা নির্ভর করে এর অন্তর্নিহিত কারণের উপর। উদাহরণস্বরূপ, ইউটিআই থাকলে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়, আর ডায়াবেটিস থাকলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

ঘন ঘন প্রস্রাব ও প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া

ঘন ঘন প্রস্রাব ও প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া

ঘন ঘন প্রস্রাব ও প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা অনেক সময় আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করে তোলে। বিশেষ করে যারা এই সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন, তারা জানেন এর যন্ত্রণা কতটা কষ্টদায়ক হতে পারে। ঘন ঘন প্রস্রাব ও প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া সাধারণত ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI), মূত্রথলির প্রদাহ, কিডনির পাথর, অথবা ডায়াবেটিসের মতো জটিল রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্থা, অতিরিক্ত কফি বা চা পান, অ্যালকোহল সেবন এবং পানি কম খাওয়ার কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অনেক সময় মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা একটু বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে টয়লেট ব্যবহারে সতর্ক না হলে বা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খেলে। পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যার কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব ও প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে। এই উপসর্গকে উপেক্ষা করলে ভবিষ্যতে তা বড় কোনো অসুস্থতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই এই সমস্যাকে ছোট করে না দেখে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।

ঘন ঘন প্রস্রাব ও গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ

ঘন ঘন প্রস্রাব ও গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ

ঘন ঘন প্রস্রাব ও গলা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে শরীরের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা এবং জীবনযাত্রার অনিয়ম। এই লক্ষণগুলো প্রায়ই শরীরে পানির ঘাটতির কারণে দেখা দেয়। যখন শরীরে পর্যাপ্ত পানি থাকে না, তখন মুখে লালার উৎপাদন কমে যায়, যার ফলে মুখ ও গলা শুকিয়ে যায়। এর পাশাপাশি, ক্লান্তি, ঝিমুনিভাব, এবং ঘন ঘন পানি তেষ্টা হওয়া এসবই ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ।

শরীরে পানির ঘাটতি ছাড়াও ডায়াবেটিস একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রস্রাবের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যায়, যা গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যাকে বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ছাড়া পেটের সমস্যা বা হজমজনিত গোলমাল থাকলেও এমন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে ইনহেলার ব্যবহারের ফলে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার কারণে গলা শুকিয়ে যেতে পারে।

ঘুমের সময় মুখ খোলা থাকার কারণেও গলা শুকিয়ে যেতে পারে। অনেকেই নাকের বদলে মুখ দিয়ে নিশ্বাস নেন, যা দীর্ঘ সময় ধরে মুখ খোলা রাখার ফলে মুখ ও গলা শুকানোর কারণ হতে পারে। স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগীদের জন্য এটি একটি সাধারণ লক্ষণ। স্লিপ অ্যাপনিয়ায় শ্বাসপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে শরীরের অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায় এবং গলা শুকানোর সমস্যা দেখা দেয়।

উচ্চ রক্তচাপ বা ফুসফুসের সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত ঘাম হয়, যা শরীর থেকে পানি বের করে দেয় এবং ডিহাইড্রেশন ঘটায়। ডিহাইড্রেশন থেকে গলা শুকানো ছাড়াও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। কিডনি বা লিভারের সমস্যাও এই উপসর্গকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।

শীতকালে এই সমস্যাগুলো আরও তীব্র হয়ে ওঠে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের পানি ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে গলা শুকানোর প্রবণতা বাড়ে। এ ছাড়া মানসিক ক্লান্তি বা অবসাদও গলা শুকানোর একটি কারণ হতে পারে। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং নিয়মিত পানি পান করা এই সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত

ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা অনেকের জীবনযাত্রায় অসুবিধা সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত মূত্রাশয়ের অতিরিক্ত সক্রিয়তা, সংক্রমণ, ডায়াবেটিস, বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে হতে পারে। এই সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক খাবার নির্বাচন করলে মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা উন্নত হয় এবং প্রস্রাবের পরিমাণ কমানো সম্ভব। তাই, ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা হলে কী খাওয়া উচিত তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে পানি পান করার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। পানি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং কিডনি ও মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা উন্নত করে। তবে অতিরিক্ত পানি পান করলে মূত্রাশয়ের উপর চাপ পড়তে পারে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে বেশি পানি পান না করাই ভালো। দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করুন, তবে তা সময় ভাগ করে করুন।

ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খান

ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন – শাকসবজি, ফলমূল (আপেল, নাশপাতি), এবং শস্যজাতীয় খাবার (ওটস, ব্রাউন রাইস) অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য মূত্রাশয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে। তাই খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে মূত্রাশয়ের চাপ কমে এবং প্রস্রাবের ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ক্র্যানবেরি জুস এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার

ক্র্যানবেরি জুস মূত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। এটি ব্যাকটেরিয়াকে মূত্রাশয়ের দেয়ালে আটকে যেতে বাধা দেয় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং অন্যান্য বেরিজাতীয় ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এগুলো মূত্রাশয়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।

কুমড়ার বীজ এবং তিল বীজ

কুমড়ার বীজ এবং তিল বীজ

কুমড়ার বীজ এবং তিল বীজে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্ক মূত্রাশয়ের পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে। এগুলো প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণ কুমড়ার বীজ বা তিল বীজ খেলে মূত্রাশয়ের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

প্রোস্টেট স্বাস্থ্য রক্ষায় টমেটো

পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যার কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। টমেটোতে থাকা লাইকোপেন প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। রান্না করা টমেটো বা টমেটোর স্যুপ খাদ্যতালিকায় যোগ করলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।

দই এবং প্রোবায়োটিক খাবার

দই ও অন্যান্য প্রোবায়োটিক খাবারে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া অন্ত্র ও মূত্রাশয়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এগুলো সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর এবং হজমশক্তি উন্নত করে।

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত না

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত না?

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ সেগুলো মূত্রাশয়কে উত্তেজিত করতে পারে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (যেমন চা ও কফি), অ্যালকোহল, সোডাযুক্ত পানীয় এবং চকলেট মূত্রাশয়ের অতিরিক্ত সক্রিয়তা বাড়াতে পারে। এছাড়া, সাইট্রাস ফল (লেবু, কমলা) এবং টমেটোর মতো অ্যাসিডিক খাবারও সমস্যা বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত ঝাল ও মশলাদার খাবারও এড়িয়ে চলা উচিত।

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কোন ডাক্তার দেখাবো

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কোন ডাক্তার দেখাবো?

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কোন ডাক্তার দেখাবো? এই প্রশ্নটি অনেকের মনে আসে, বিশেষ করে যখন এর সঙ্গে জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি বা রাতে বারবার প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণভাবে, একজন ইউরোলজিস্ট এই ধরনের সমস্যা দেখেন, তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে কখনও কখনও গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শও প্রয়োজন হতে পারে। টেস্ট অনুযায়ী একজন পুরুষ বা মহিলাকে একজন ইউরোলজিস্টের কাছে রেফার করা যেতে পারে, বা একজন মহিলাকে একজন গাইনোকোলজিস্টের কাছে। আমাদের চিকিৎসা কেন্দ্রে (ডায়াবিটে) ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য আধুনিক ও কার্যকর থেরাপি যেমন ওজন গ্যাস, পেলভিক ফ্লোর স্টিমুলেশন, শকওয়েভ থেরাপি (shockwave therapy), আকুপাংচার, পালস ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক থেরাপি এবং থেরাপিউটিক ব্যায়ামের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তাই যদি ভাবেন ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কোন ডাক্তার দেখাবো, তাহলে আমাদের অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন এবং সমস্যার সমাধান করুন।

 

বিস্তারিত জানুন: টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর পার্থক্য কি?

বিস্তারিত জানুন: ডায়াবেটিস রেঞ্জ চার্ট ইন বাংলাদেশ

 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

ঘন ঘন প্রস্রাবের পেছনে সবচেয়ে পরিচিত কারণটা হলো মূত্রনালীর সংক্রমণ, যাকে আমরা ইউটিআই (UTI) নামে চিনি। এটা আসলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, যা আমাদের মূত্রতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে বাসা বাঁধতে পারে।

সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দিনে চার থেকে আটবার প্রস্রাব করে থাকেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top